লিখেছেন ঃঃ তারেকুল ইসলাম শভন -
আসসালামু আলাইকুম।
এই গরমে র্যাবিটের অনেক সমস্যা হয়। তার বেশ কয়েকটা সমস্যা নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করবো।
এখানে আলোচিত সমস্যাগুলি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শেয়ার করা। নতুন বা পুরাতন যারা আছেন আশা করি আপনাদের নিত্যনতুন সমস্যাগুলোর সমাধান পাবেন।
পর্ব-১**
সর্বপ্রথম যেটি নিয়ে কথা বলতে চাই গরমে র্যাবিটের কেয়ার নেয়া প্রসংগে। এই গরমে মানুষের ই জীবন কাহিল হয়ে যাচ্ছে আর র্যাবিটের কথা কি বলবো। র্যাবিটের গায়ে প্রচুর পশম থাকার কারনে এদের গরম আমাদের চেয়ে বেশি লাগে। তখন এরা কি করে???
- দিনের বেলা চুপচাপ থাকে।
- দিনে খায় না, লুকিয়ে থাকে ঠান্ডা জায়গায়।
- পানিশুন্যতা হলে হাত পা ছেড়ে দেয় নড়তে পারেনা।
- বেশিরভাগ সময় ই দিনের বেলা অলস হয়ে পড়ে থাকে আর আমরা ভাবি এত প্লেফুল বাচ্চাটার কি হইলো হঠাৎ!!!
যাইহোক কি করবেন তাহলে আপনি???
- ঠান্ডা পানির হাল্কা স্প্রে দিতে পারেন তার গায়ে। কানে যাতে পানি না ঢুকে।
- ঠান্ডা পানির বোতল ওর আরামের জায়গায় রেখে দিবেন।
- ২ দিন পর পর ভেজা কাপড় দিয়ে গা মুছে দিবেন।
- পানি শুন্যতায় যাতে না পড়ে তার জন্য ২ দিন পর পর স্যালাইন দিবেন। ১ লিটার পানিতে স্যালাইন গুলে সেটা থেকে দিবেন। ৬ ঘন্টা পর স্যালাইন ফেলে দিবেন।
- একই উপায়ে গ্লুকোজ দিতে পারবেন ২ দিন পর পর।
- ফ্যান ছেড়ে রাখতে পারেন রুমে।
- লম্বা পশম যেমন এংগোরা জাতের র্যাবিটগুলাকে প্রোপার কেয়ার করবেন এদের গরম বেশি লাগে, যারা এসি এফোর্ড করেন তারা এসিতে রাখবেন। নইলে এরা হুটহাট স্ট্রোক করে বসে😑😑
- গায়ের পশম গুলা আচড়ে দিবেন। এতে ওদের স্বস্থি লাগে আর পুরাতন পশমগুলা পড়ে যায়। এতে আরেকটা সুবিধা হচ্ছে র্যাবিটের লোম পড়া নিয়ে যেসব পোস্ট আসে তাদের জন্য। ওদের গা আঁচড়ে দিলে পুরাতন পশমগুলা পড়ে যায়, এতে হঠাৎ করেই গা থেকে অনেক অনেক পশম উঠবেনা যেটা দেখে অনেকেই ভয় পেয়ে যান!!
- পানি অবশ্যই দিবেন৷ দেখুন একটা কথা অনেকবার ই বলি যে পানির অপর নাম জীবন। পানি খায় না এমন প্রানী খুজে পাওয়া কঠিন। প্রায় অনেকেই অভিযোগ করেন আমার বাচ্চা পানি খায়না, কখনো দেখিনাই, এটা কি সম্ভব!!!??
হ্যা সম্ভব। কখন???? যখন আপনি মিনারেল জাতীয় খাবার দিবেন তখন সে পানি খাবেনা। যেমন শশায় প্রচুর পানি থাকে। এটা খেলে ওদের পানি তৃষ্ণা পায়না। এভাবে পানি জাতীয় ফল বা ফ্রেশ ঘাসে রস থাকলে ওদের পানির তৃষ্ণা কম লাগে। কিন্তু পানি ওরা খাবেই। সুতরাং আপনি পানি দিয়ে রাখবেন। পানি খেলে পই তে গন্ধ হবেনা। পি ফ্রেশ থাকবে। ঘাস খাওয়ালে পটি তে গন্ধ হবে না। আচ্ছা সেই ব্যাপারে আরেকদিন কথা বলবো।
কি করবেন না--
১. কখনোই গোসল করাবেন না৷ কখনোই না।
২. গ্লুকোজ, স্যালাইন পরিমান মত দিবেন। এক পিরিচ দিলে ওটা খাওয়া শেষ হয়ে গেলে ফ্রেশ পানি দিবেন।
৩. বেশি বেশি কোলে নেয়া থেকে বিরত থাকবেন, গরমের ভিতর আপনাকে ধরে কেউ কচলালে আপনার কেমন লাগবে😒😒
তাহলে গরমে এইগুলা করলে আপনার র্যাবিট ইনশা আল্লাহ সুস্থ থাকবে।
নেক্সট যেটা নিয়ে কথা বলবো সেটা হচ্ছে হিট-স্ট্রোক।
কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জিজ্ঞেস করুন।
আসসালামু আলাইকুম
ধারাবাহিক আলোচনার আজকে দ্বিতীয় পর্ব।
পর্বঃ২
গত পর্বে কিভাবে গরমে র্যাবিটকে কেয়ার করবেন সেই ব্যাপারে আলোচনা করেছি। আজকের আলোচনার বিষয় "হিটস্ট্রোক"
#হিটস্ট্রোক কি???
-- হিটস্ট্রোক হচ্ছে হিটের কারনে বা গরমের কারনে র্যাবিট হঠাৎ যেই শক খায় তাকেই সোজা কথায় হিটস্ট্রোক বলে।
#কখন হয় এটা??
-- যখন প্রচন্ড গরম পড়ে তখন এটির সম্ভাবনা বেশি থাকে। হিটস্ট্রোকের আনুমানিক সময় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত। আরও একটি হিটস্ট্রোকের কারন হিসেবে আমি মনে করি বেশি বেশি কোলে নেয়া। এদের গায়ে প্রচুর পশম থাকার কারনে আপনি যখন বেশি সময় কোলে নিয়ে আদর করবেন তখন এদের গরম লেগে উঠে আপনি বুঝার আগেই ওরা শক খেয়ে যেতে পারে!! আদর করতে সাবধান থাকবেন।
#কিভাবে বুঝবো হিটস্ট্রোক করছে??
-- হঠাৎ হাত পা ছেড়ে দিবে। মোটেও নড়বেনা বা শুধু কাঁপবে, বুক উঠানামা করবে, কান গরম হয়ে থাকবে, জোরে জোরে দ্রুত নিশ্বাস নিবে, নাকে মুখে শ্লেষ্মা দেখবেন,চোখ উল্টে যেতে পারে সিরিয়াস ক্ষেত্রে। ২ ঘন্টার মধ্যে মোটামুটি ভবলিলা শেষ হয়ে যায়😔😔
#চিকিৎসা কি করবো তখন???
-- সর্বপ্রথম ঠান্ডা একটা প্লেসে নিয়ে যাবেন, ফ্যান ছেড়ে দিবেন বা এসির ভেতর নিয়ে যাবেন।
* ঠান্ডা একটা তোয়ালে ওদের গায়ের উপর রাখবেন।
* ঠান্ডা পানি (অতিরিক্ত না) খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।
হিট মানে গরম আর গরমের শত্রু হচ্ছে ঠান্ডা। সুতরাং পরিস্থিতি যদি শুরুতেই কন্ট্রোল করে ফেলতে পারবেন ইনশাআল্লাহ এর মধ্যেই সুস্থ হয়ে যাবে। অনেকে বলতেই পারেনা কখন স্ট্রোক করছে। যখন জানতে পারে তখন দেরি হয়ে যায়৷ তাই আপনার বাচ্চাটাকে খেয়াল রাখবেন। দায়িত্ব যখন নিয়েছেন ই সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করুন।
#হিটস্ট্রোক থেকে কিভাবে পরিত্রান পাবো???
- এখন হিটস্ট্রোক এর ভরা সিজন। যখন তখন এটা হয়ে যেতে পারে৷ সকালে ভালো বিকেলে নাই হয়ে যেতে পারে। তাই ঘরে যেকোনো একটা ঠান্ডা জায়গায় ওদেরকে রাখার ব্যবস্থা করুন, যেদিন গরম বেশি পড়বে সেদিন ঠান্ডা পানির বোতল দিন ওদের পাশে। পানি দিয়ে রাখুন। গা মুছে দিন ১/২ দিন পরপর। যেদিন গরম বেশি পড়বে সেদিন চোখে চোখে রাখবেন। আর কিছু করা লাগবে না।
র্যাবিট মূলত ঠান্ডা এলাকার প্রানি। এরা অলমোস্ট -২° সেলসিয়াসে ও দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে যেখানে আমরা বরফে জমে যাবো!! এরা পশমের কারনে ঠান্ডায় ভালো থাকতে পারে। এরা গরম সহ্য করতে পারেনা। তাই আপনি একটু সাবধান হলেই এই গরমে ওদের যেকোনো বিপদ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
***নেক্সট কি সম্পর্কে জানতে চান কমেন্টে লিখুন
আমার খরগোস পায়ে ব্যাথা পেয়েছে।খাচ্ছেনা।করনীয় কি
উত্তরমুছুন